নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাভারে মৃত্যুর ২৩ দিন পর ব্যবসায়ী মোঃ জামালের(৫৪) মরদেহ আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করা হয়েছে।
রবিবার সকালে সাভার পৌর দক্ষিণ রাজাশনের ঘাসমহল এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাসেল ইসলাম নুর এর উপস্থিতিতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।পরে সাভার থানা ওসি ইন্টেলিজেন্স আব্দুল্লা বিশ্বাস লাশ গ্রহণ করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।এসময় স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সেলিম মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
নিহত জামাল গবাদি পশুর খামারের মালিক ছিলেন, তিনি দক্ষিণ রাজাশনের বাসিন্দা মৃত ফরিদ আহমেদ গোলদারের ছেলে ।
ঘটনা সুত্রে জানা গেছে, গত ১৬ই সেপ্টেম্বর রাতে দক্ষিণ রাজাশন (সাইন বোর্ড মোড়) এলাকার বাসিন্দা ফোরকান হাকিমের বাড়িতে ব্যবসায়ী জামাল অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে এমনটা খবর দেওয়া হয় নিহতের স্বজনদের। পরে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে। স্বজনদের দাবি পরিকল্পিত ভাবে জামালকে মারধোর করে হত্যা করে ব্রেন স্টোক করে মারা গেছে বলে প্রচার করে আসামীরা। এ অভিযোগ করেন নিহত জামালের স্বজনেরা।
জামালের মরদেহ দাফন করার পরপরই আসামীরা বাড়িঘরে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় নিহতের ভাই ইমরান হোসেন বাদী হয়ে ফোরকান হাকিম(৪৮), লোকমান হাকিম(৫১), গোফরান হাকিম সর্ব পিতা আব্দুল হামিদ, সাং দক্ষিণ রাজাশন,কাঞ্চন সিয়ালী(৫৫) পিতা আজিজ সিয়ালী, সাং রুইতা, আলী নগর ইউপি, থানা-ভোলা সদর সহ অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জনকে আসামী করে বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সাভার আমলী আদালতে সি আর মামলা নং ১০৬৬/২০২৩ দায়ের করে। আদালত মামলা আমলে নিয়ে লাশ উত্তোলন পুর্বক ময়নাতদন্তের নির্দেশ প্রদান করে।
সি আর মামলার আর্জি সুত্রে জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক পৌনে ১২টায় নিহত ব্যবসায়ী জামালের ছোট ভাই ইমরানের মোবাইলে ফোন করে দক্ষিণ রাজাশনের ফোরকান হাকিম। তিনি জানান, ব্যবসায়ী জামাল তার বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এমন সংবাদ পেয়ে বাদী লোকজন নিয়ে আসামিদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় তার ভাইকে অজ্ঞান আধা শোয়া অবস্থায় ফোরকান ধরে রেখেছে। পরে বাড়ির উঠানে শোয়াইয়া দিলে জামালের মাথার ডান পাশে ও দুই হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়। এসময় আসামীরা জানান জামাল অসুস্থ্য হয়ে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছে। আসামীরা জামালকে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে। এরপর বাদীর আপত্তি সত্তেও আসামীরা তড়িঘড়ি করে লাশ নিয়ে যায় জামালের বাড়িতে। সেখানে আসামীরা নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর নিকট বলতে থাকে জামাল স্টোক করলে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য প্রাইভেট কার ডাক দেয় এবং বাদীকে আসতে ফোন করে। তাৎক্ষণিক জামালের শোকাহত পরিবার বিষয়টি বিশ্বাস করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করে। পরের দিন লোক মারফত খবর পায় রাত ১০ টায় আসামী ফোরকান ফোন করে জামালকে বাড়ীতে ডেকে নেয়। এবং ঘটনার সময় মারপিট ও ডাক চিৎকারের শব্দ পায় এলাকাবাসী। এছাড়া ফোরকানের ঘরে ও ঘরের বাহিরে রক্তের চিহ্ন দেখা গেছে। ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক রয়েছে।