ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে শুক্রবারের বৃষ্টিতে কক্সবাজারের জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ১৫-২০ মিনিটের বর্ষণে গরম কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। তবে এ সময় সেন্ট মার্টিনসহ টেকনাফ উপকূলে বৃষ্টিপাত হয়নি। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানিয়েছেন, মোখার প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত। তা থেমে থেমে আবারও হতে পারে।
এদিকে মোখার কারণে সাগর স্বাভাবিক পরিস্থিতির চেয়ে একটু উত্তাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন সৈকতের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বীচকর্মী মাহবুবল আলম। তিনি বলেন, পর্যটকদের সতর্ক করতে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশনা মতে ৪ নম্বর সতর্কসংকেত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পর্যটকদের সৈকতের পানিতে নামা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রতি আমরা বিশেষ নজর রাখছি। তবে এখনো মানুষ সরিয়ে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। কিন্তু দ্বীপে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রসহ সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে কয়েক শ বাসিন্দা ঘূর্ণিঝড় আতঙ্কে টেকনাফে পাড়ি দিয়ে আত্মীয়-স্বজনের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। দ্বীপের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ কালের কণ্ঠকে জানান, সচ্ছল পরিবারের বেশ কিছু লোক টেকনাফে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান জানান, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্ট মার্টিনকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় দ্বীপের জন্য নৌবাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি দ্বীপে বিজিবি, পুলিশ, কোস্ট গার্ড সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে হোটেল-মোটেল ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সব সরকারি স্থাপনাসহ হোটেল-গেস্টহাউসগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। বাসিন্দাদের সচেতনতার পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য আগে থেকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, জেলার উপকূলীয় উপজেলাসহ নিচু এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দাদের নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য দ্বীপের সরকারি হাসপাতাল, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, পুলিশের ভবনসহ দ্বীপের রিসোর্টগুলোকে ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরো জানান, ইতিমধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোলরুমের নম্বর হচ্ছে ০১৮৭২-৬১৫১৩২।